কানাডা সরকারের অভ্যন্তরীণ নথি অনুসারে, দেশটি এমন ক্ষমতা চাচ্ছে যা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট গ্রুপের বিদেশি নাগরিকের ভিসা বাতিল করতে পারবে। বিশেষ করে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকদের লক্ষ্য করে এই ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতারণামূলক ভিসা আবেদন শনাক্ত ও বাতিল করার জন্য কানাডার ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা (আইআরসিসি) এবং সীমান্তরক্ষী সংস্থা কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করেছে।
গ্রুপটির মূল কাজ হবে সন্দেহজনক বা প্রতারণামূলক আবেদন শনাক্ত করা এবং প্রয়োজনে তা বাতিল করার ক্ষমতা নিশ্চিত করা। সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, এই ক্ষমতা মহামারি, যুদ্ধ বা নির্দিষ্ট দেশের ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হতে পারে। যদিও অভিবাসনমন্ত্রী লেনা দিয়াব এই ক্ষমতার প্রয়োগের উদাহরণ হিসেবে মহামারি বা যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন, ‘নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক’ বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে বলেননি।
কানাডা সরকার ইতিমধ্যেই একটি বিল পার্লামেন্টে তুলেছে, যাতে এই গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা আইনি স্বীকৃতি পাবে। সরকারের লক্ষ্য দ্রুত এই বিলটি পাশ করানো।
নথি অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ভারত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর কঠোর পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের আগস্টে কানাডা উচ্চশিক্ষার জন্য আসা ভারতীয় শিক্ষার্থীর প্রায় ৭৪ শতাংশ ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে, অর্থাৎ প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন ভিসা পাননি। ফলে ভারতের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কানাডায় উচ্চশিক্ষার পথ আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারতের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মাসিক আবেদন ছিল প্রায় ৫০০, যা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্রায় ২ হাজারে পৌঁছেছে।
এই বৃদ্ধির কারণে ভিসা যাচাই ও প্রক্রিয়াকরণে সময় দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে যেখানে গড়ে ৩০ দিন লাগত, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা বেড়ে ৫৪ দিনে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে অনুমোদনের সংখ্যা কমেছে। জানুয়ারি ২০২৪ সালে অনুমোদন সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজারের বেশি, জুনে তা নেমে এসেছে প্রায় ৪৮ হাজারে। এই পরিস্থিতি কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়ায় চাপ বৃদ্ধি করেছে এবং ভবিষ্যতে ভারতের ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ ভ্রমণকারীদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।








































আপনার মতামত লিখুন :