binodonerpadmaful
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

বর্ষাকালে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যেসব সতর্কতা মেনে চলবেন


বিনোদনের পদ্মফুল | ভ্রমণ ডেস্ক  জুন ১৩, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম বর্ষাকালে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যেসব সতর্কতা মেনে চলবেন

বর্ষাকাল মানেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, মেঘের গর্জন আর পিচ্ছিল রাস্তাঘাট। এই মৌসুমে বাড়িতে মন টেকে না কিছুতেই। অনেকেই বর্ষাকালকে ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন, বিশেষত যারা প্রকৃতির রোমাঞ্চ খুঁজে বেড়ান। তবে বর্ষাকালে ভ্রমণ যেমন রোমাঞ্চকর হতে পারে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে যদি প্রয়োজনীয় সতর্কতা না নেওয়া হয়। তাই আসুন জেনে নিই বর্ষাকালে ভ্রমণে গেলে যেসব সতর্কতা মেনে চলবেন-
১. আবহাওয়ার পূর্বাভাস
বর্ষাকালে আবহাওয়া অত্যন্ত অনিশ্চিত থাকে। যে কোনো সময় বৃষ্টি শুরু হতে পারে, আবার কোথাও ভারী বর্ষণের ফলে বন্যাও দেখা দিতে পারে। তাই যাত্রার পূর্বে এবং যাত্রাকালে নিয়মিত আবহাওয়ার আপডেট দেখা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে মোবাইল অ্যাপ, গুগল ওয়েদার কিংবা টিভি ও সংবাদ মাধ্যমে সহজেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
২. স্যানিটাইজার
বর্ষায় নানা ধরনের সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাই বাইরে বের হলে হাতের কাছে সব সময় স্যানিটাইজারের বোতলটি রেখে দিন। কেননা বেড়াতে গিয়ে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার ওপর নজর দিতে হবে। এছাড়া বেড়াতে গেলে সবসময় হাত ধোয়ার সুযোগ থাকে না, তাই স্যানিটাইজার বোতলটি হাতের কাছে রাখতে হবে।
৩. উপযুক্ত পোশাক ও জুতা পরা
বর্ষাকালে পোশাক নির্বাচনে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। হালকা, দ্রুত শুকায় এমন কাপড় পরা ভালো। তুলার বা জিন্সের কাপড় ভিজে গেলে শুকোতে সময় নেয় এবং তা ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বাড়ায়। রেইনকোট বা ছাতা অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। জুতার ক্ষেত্রে পানি নিরোধক (ওয়াটারপ্রুফ) ও ভালো গ্রিপযুক্ত জুতা নির্বাচন করা উচিত। পিচ্ছিল পথে চলতে গেলে হঠাৎ পড়ে গিয়ে আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে। স্যান্ডেল বা খোলা জুতা পরলে পা কাদায় ভরে যেতে পারে বা জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
৪. রেইনকোট ও ছাতা
বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা-রেইনকোট রাখুন। বৃষ্টি থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে চলুন। কারণ হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
৫. পানির বোতল
ভ্রমণে গেলে সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত পানির বোতল। এ সময় কিন্তু গরমকালের মতোই ডিহাইড্রেশন হওয়ার ভয় থাকে। একটানা দীর্ঘ ভ্রমণ করলে ঘেমে যাওয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হয়। তাই পর্যাপ্ত পানি ও শুকনো খাবার সঙ্গে নিন।
৬. টিস্যু পেপার
বিভিন্ন জিনিস পরিষ্কারের কাজে ব্যবহারের জন্য সঙ্গে রাখুন টিস্যু পেপার। একইসঙ্গে রাখুন সুতির নরম কাপড়। ক্যামেরার লেন্স ও ত্বক পরিষ্কারের কাজে এগুলো ব্যবহার করা যাবে।
৭. প্রয়োজনীয় ওষুধ ও প্রথমিক চিকিৎসার সামগ্রী সঙ্গে রাখা
বর্ষাকালে সর্দি-কাশি, জ্বর, ত্বকে ফুসকুড়ি বা ডায়রিয়া জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ যেমন: প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড, ব্যান্ডেজ, এন্টিসেপটিক, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বা লবণ-গ্লুকোজ সঙ্গে রাখা প্রয়োজন। যদি পাহাড়ি বা দুর্গম এলাকায় যান, তাহলে প্রথমিক চিকিৎসার একটি কিট অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন।
৮. ব্যাকআপ পরিকল্পনা রাখা
বর্ষাকালে রাস্তায় জলাবদ্ধতা, যানজট অথবা হঠাৎ বন্যার কারণে যাত্রা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই ভ্রমণের পরিকল্পনায় বিকল্প পথ বা বিকল্প গন্তব্য রাখলে বিপদে পড়লে সহজে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এছাড়া প্রয়োজনীয় নম্বর যেমন: স্থানীয় প্রশাসন, হোটেল, নিকটস্থ হাসপাতাল, আত্মীয়-স্বজন এসব সংরক্ষিত রাখা জরুরি।
৯. ইলেকট্রনিক ডিভাইস সুরক্ষা
বর্ষার ভ্রমণে ফোন, ক্যামেরা, পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব ডিভাইস ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগে রাখা উচিত। চাইলে জিপলক ব্যাগ বা পলিথিন দিয়েও মোড়ানো যেতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পাওয়ার ব্যাংক এবং চার্জার সঙ্গে রাখলে দরকারের সময় ডিভাইস বন্ধ হয়ে পড়বে না।
১০. স্থানীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকা
যে এলাকায় যাচ্ছেন, সেখানে কোনো ধরনের সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক সমস্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে কি না তা জানা অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে কিংবা সংবাদ মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা উচিত।
১১. ওয়াটার প্রুফড্ ব্যাগ
ভ্রমণে যাওয়ার সময় অবশ্যই ওয়াটার প্রুফড্ ব্যাগ নিন। লাগেজ কিনতে চাইলে সেটিও ওয়াটার প্রুফড্ কি-না তা যাচাই করে নিন। এতে বৃষ্টির মধ্যেও লাগেজ ভিজবে না।
১২. প্লাস্টিক জিপলক
ব্যাগে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের পাউচ ভরে নিন। যখন-তখন বৃষ্টি শুরু হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তখন পাওয়ার ব্যাঙ্ক, চার্জার, ওষুধ, টাকা-পয়সা সেই জিপলক ব্যাগে ভরে নিন। তাহলে বৃষ্টির পানির হাত থেকে সেগুলো সুরক্ষিত থাকবে।

Side banner