binodonerpadmaful
ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

চৌগাছায় পশুর হাট থেকে দেড় কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ


বিনোদনের পদ্মফুল | স্টাফ রিপোর্টার জুন ২৩, ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম চৌগাছায় পশুর হাট থেকে দেড় কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

যশোরের চৌগাছা পশুহাট থেকে বিগত চার বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার রাজস্ব লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, পৌরসভার সাবেক মেয়র নূর উদ্দীন আলম মামুন হিমেল ও ইজারাদার আবিদুর রহমান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের যোগসাজশে এই অর্থ আত্মসাত করেছেন। চক্রটি আবারও চৌগাছা পশুহাট দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ সালে স্থানীয় ইয়ামুল অর রশীদ টিটো ৫৬ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকায় হাটটি ইজারা নেন। কিন্তু তার কাছে এখনো ২৬ লাখ ৪ হাজার ২০০ টাকা পাবে পৌরসভা। ২০২২ সালে শামীম রেজা ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা নেন। তার কাছেও ৫৫ লাখ ১২ হাজার টাকা পাবে পৌরসভা।
২০২৩ সালে ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাটটি ইজারা নেন আসিফ ইকবাল ভুট্টো। তার কাছেও ৩৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে পৌরসভার। ২০২৪ সালে মিজানুর রহমান ৮০ লাখ ১৫ হাজার টাকায় ইজারা নেন। সেখান থেকে পৌরসভা ৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫০ টাকা পাবে। অর্থাৎ গত চার বছরে রাজস্ব লোপাট করা হয়েছে এক কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ টাকার।
অভিযোগ রয়েছে, এই রাজস্ব লোপাটের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ নেতা পৌরসভার সাবেক মেয়র নূর উদ্দীন আলম মামুন হিমেল, ইয়ামুল অর রশীদ টিটো, শামীম রেজা, আসিফ ইকবাল ভুট্টো, মিজানুর রহমান, আবিদুর রহমান ও চৌগাছায় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা পাতিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল। তবে এই টাকা আদায়ের ব্যাপারে পৌর প্রশাসক কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। চৌগাছা পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে প্রথমে সহকারী কমিশনার গুঞ্জন বিশ্বাস এবং পরে প্রকৌশলী তাসমিন জাহান নিয়োগ পান। নতুন পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েই তাসমিন জাহান পৌরসভার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ নেন।
তিনি ২০২৫ সালের জন্য চৌগাছা পৌরসভার সাধারণ হাট ও পশুহাটের প্রকাশ্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর শুরু হয় চৌগাছার পশু হাট নিয়ে রশি টানাটানি। সাবেক মেয়র হিমেলের লোকজন আবারও হাট দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। টেন্ডার বাদেই হাট ইজারা নিতে ঝিনাইদহের আবিদুর রহমান বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। পরে হাটের দখল নিয়ে আদালতে মামলা হয়।
চৌগাছার ঠিকাদার আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, পৌরসভার সাবেক মেয়র হিমেল, টিটো, শামীম, ভুট্টো, মিজানুর রহমান এবং পাতিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বিগত চার বছরে হাটের প্রায় দেড় কোটি টাকা লোপাট করেছেন। ডাকের (নিলাম) টাকা পরিশোধ না করে হাট থেকে টাকা তুলেছেন।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা পাতিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বলেন, পৌরসভা ও আমার শ্বশুরের জায়গায় পশুর হাটটি করা হয়েছে। এ কারণে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে জড়ানো হচ্ছে। আমি দখল ও অর্থ লোপাটের সঙ্গে জড়িত নই।
তিনি বলেন, আমি ধানের শীষের লোক হয়ে পরপর তিনবার চেয়ারম্যান হয়েছি। অপকর্ম যা করার আওয়ামী লীগের লোক করেছেন।
জানতে চাইলে চৌগাছা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান বলেন, চৌগাছা পশু হাট নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। রায় হাতে পেলে নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

Side banner