binodonerpadmaful
ঢাকা বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

কিডনি ভালো রাখতে যা করবেন


বিনোদনের পদ্মফুল | জীবনযাপন ডেস্ক অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম কিডনি ভালো রাখতে যা করবেন

আমাদের কিডনি শরীরের অন্যতম অঙ্গ, যা রক্ত ফিল্টার করে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে, যা শরীর প্রস্রাব হিসেবে নির্গত করে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, জিন বা বয়সের কারণে কিডনির কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (সিকেডি) হতে পারে। তবে এই সমস্যা প্রতিরোধযোগ্য। আমরা বেশিরভাগ সময়েই শুনে থাকি যে কিডনি সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আসলে সত্যি, তবে কিডনি সুস্থ রাখার জন্য আপনার পক্ষ থেকে আরও কিছুটা প্রচেষ্টা প্রয়োজন। জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে তা সহজ করা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. সুষম খাদ্য বজায় রাখুন
টাটকা ফল, শাক-সবজি, হোল গ্রেইন ফুড এবং চর্বিযুক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খেলে কিডনি ভালোভাবে কাজ করে। সোডিয়াম সমৃদ্ধ, প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ কিডনিতে চাপ এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে। কিডনির সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের পটাসিয়াম এবং ফসফরাস গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন, তবে টাটকা এবং প্রাকৃতিক খাবার কিডনি ভালো রাখতে কাজ করে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কমালে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা কিডনির জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। সঠিকভাবে খাবার খেলে কিডনি সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতায় কাজ করে, যা দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২. রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ করুন
কিডনির ফিল্টারিং সিস্টেম উচ্চ রক্তচাপের কারণে চরম চাপের সম্মুখীন হয়, যার ফলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্রমশ ক্ষতি হয়। কিডনির রক্তচাপ স্বাভাবিক স্তরে বজায় রাখা প্রয়োজন, কারণ এটি ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত পরীক্ষা করলে, ওষুধের নির্দেশাবলী অনুসরণ করলে, লবণ গ্রহণ কমিয়ে দিলে এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল শিখলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, স্থিতিশীল রক্তচাপের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করলে তা কিডনিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, সেইসঙ্গে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে।
৩. শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন
ব্যায়াম হৃদরোগের জন্য সুবিধা প্রদান করে, সেইসঙ্গে কিডনির কার্যকারিতাও উন্নত করে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নত রক্ত সঞ্চালন সক্ষম করে যা কিডনিকে রক্ষা করতে কাজ করে। দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার মতো কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করা উচিত। শারীরিক ব্যায়াম শরীরের ইনসুলিন পরিচালনা করার ক্ষমতা উন্নত করে, যা ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে শরীর টক্সিন ব্যবস্থাপনায় আরও ভালোভাবে কাজ করে এবং এর বিপাকীয় স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
৪. ধূমপান বাদ দিন
ধূমপানের ফলে শরীরের রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে কিডনিতে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। তখন কিডনি ক্ষতির জন্য আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। ধূমপান ত্যাগ করার কাজটি আপনার কিডনির স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আপনার সাধারণ সুস্থতার জন্যও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অন্যদিকে, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন শরীরের পানিশূন্যতা এবং কিডনির অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করে, যা কিডনির জন্য বর্জ্য পরিশোধনকে কঠিন করে তোলে।  মদ্যপান সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চললে তা কিডনির চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন
ডায়াবেটিস থেকে কিডনির ক্ষতি ঈকউ-এর অন্যতম প্রধান কারণ। রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ অতিরিক্ত গ্লুকোজ কিডনির মধ্যে ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিডনির সুরক্ষা নির্ভর করে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রাখার ওপর। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা এবং নির্ধারিত ওষুধের চিকিৎসার সমন্বয় রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। 

Side banner